রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ অপরাহ্ন

আদানির বিদ্যুৎ আসছে সেপ্টেম্বরের শেষে

আদানির বিদ্যুৎ আসছে সেপ্টেম্বরের শেষে

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ভারতের ঝাড়খণ্ডে আদানি গ্রুপের নির্মাণ করা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট আগামী মাসের শেষ দিকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করছে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঙ্গে গ্রিড লাইন যুক্ত করে সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ দিয়ে পরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে।

kalerkanthoদেশে আসার কথা।

বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আদানির এই বিদ্যুৎ দেশে এলে চলমান সংকট অনেকটাই কমে যাবে। তখন ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সূত্র বলছে, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেওয়ার মতো সঞ্চালন অবকাঠামো এখনো প্রস্তুত করা যায়নি। যে কারণে প্রথম ইউনিট প্রস্তুত হলেও তার পুরো সক্ষমতা এখনই ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিদ্যমান সাবস্টেশনে নিয়ে এই বিদ্যুৎ দেশের উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করা হবে। এতে আপাতত উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুত্সংকটের নিরসন হবে।

জানতে চাইলে পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে সঞ্চালন লাইন পরীক্ষা করা হয়েছে। এই বিদ্যুৎ দেশে আনতে এখন আর গ্রিড লাইনের কোনো সমস্যা নেই। ’

বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি ও গবেষণা শাখা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। বাকি কাজগুলোও কিভাবে দ্রুত সম্পন্ন করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, আগামী মাসের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদনে আসবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। ’ তিনি বলেন, ‘এর ওপর ভিত্তি করেই আমরা বলছি, অক্টোবর থেকে চলমান লোড শেডিং পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হবে। একই সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রেখে কম ব্যয়ের কেন্দ্রগুলো চালানো যাবে। সেই ক্ষেত্রে কয়লা দিয়ে যদি আমাদের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়, তাহলে ডিজেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো আর চালানোর দরকার হবে না। ’

বিপিডিবি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ভারত থেকে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বিপিডিবি। আদানির প্রথম ইউনিটের ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা গেলে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ দাঁড়াবে এক হাজার ৯৬০ মেগাওয়াটে। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পুরো সক্ষমতা (১৪৯৫ মেগাওয়াট) অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ হলে আমদানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে দুই হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াটে, যা দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ১০ শতাংশ।

পিজিসিবি সূত্রে জানা যায়, আদানির বিদ্যুৎ দেশে আনার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে এবং বগুড়ায় ৪০০ কেভির দুটি গ্রিড সাবস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই সাবস্টেশনের নির্মাণকাজ এখনো শেষ করা যায়নি। ফলে এখনই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুরো সক্ষমতা বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারবে না। আদানির বিদ্যুৎ দেশে আমদানির জন্য এরই মধ্যে ভারত সীমান্তবর্তী মনাকষা থেকে রহনপুর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এই সঞ্চালন লাইন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২২৬ কোটি টাকা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আদানির বিদ্যুৎ দেশে যত দ্রুত আসবে, ততই আমাদের জন্য ভালো। কারণ এটি এলে ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া যাবে। তাতে দেশে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমে আসবে। ’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877